Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

কৃষিবান্ধব জাতির পিতা আধুনিক বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা

কৃষিবান্ধব জাতির পিতা আধুনিক বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা

কৃষিবিদ ড. মো. আখতারুজ্জামান
আমাদের জাতির পিতা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠে বাঙালি, বহুধা অঁচলে অভিজ্ঞ, প্রাজ্ঞ, বিজ্ঞ একজন বরেণ্য রাজনীতিবিদ, বাঙালির মুক্তির দিশারি এবং আধুনিক বাংলাদেশের অন্যতম রূপকার। তাইতো তিনি তাঁর স্বল্প কর্মকালীন সময়ে কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শিল্প, সাহিত্য, বিজ্ঞান, ধর্ম, তথ্য প্রযুক্তি, নারীর ক্ষমতায়ন, পররাষ্ট্রনীতি ইত্যাকার বিষয়ে নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। তাই বঙ্গবন্ধু একবাক্যে আধুনিক বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা হিসেবে আখ্যায়িত করা যায়।


আমরা যাঁরা কৃষিবিদ বা কৃষির সাথে সংশ্লিষ্ট তাঁরা বঙ্গবন্ধুকে দেখি একজন কৃষিচিন্তক ও কৃষিবান্ধব রাষ্টনায়ক হিসেবে; তিনি ঠিক বুঝতে পেরেছিলেন আমাদের কৃষিই পারে আমাদের দেশের আপামর জনগোষ্ঠীর খাদ্য পুষ্টির জোগান দিতে কারণ এ দেশের মতো কৃষি উপযোগী উর্বর মাটি আবহাওয়া ও জলবায়ু পৃথিবীর কোথাও নেই। বঙ্গবন্ধু তাঁর স্বল্প কর্মকালীন সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের কৃষি উন্নয়নে যুগান্তকারী যেসব পদক্ষেপ নিয়েছিলেন, সেসবের মধ্যে অন্যতম ছিল-২৫ বিঘা পর্যন্ত জমির খাজনা মওকুফ; গ্রাম্য সমাজভিত্তিক কৃষকের জন্য সুদমুক্ত ঋণের প্রবর্তন; স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ২২ লাখ কৃষককে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ; প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বৃক্ষরোপণ অভিযান চালুকরণ; প্রথম বাজেটেই কৃষিতে ভর্তুকির ব্যবস্থা গ্রহণসহ সার, কীটনাশক ও সেচ যন্ত্রাংশ সরবরাহ; প্রাইম সাপোর্ট হিসেবে ধান, পাট, আখ প্রভৃতি ফসলের ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ; গ্রাম্য সমাজভিত্তিক সবুজ বিপ্লবের কর্মসূচি গ্রহণ; ১৯৭২-৭৩ সালের ৫০০ কোটি টাকা উন্নয়ন বাজেটের মধ্যে কৃষি খাতে ১০১ কোটি টাকার বরাদ্দ রেখেছিলেন।


অধিকন্তু কৃষি নিয়ে বঙ্গবন্ধু অনেক আপ্তবাক্যের অবতারণা করে গিয়েছেন। কৃষি মন্ত্রণালয় বঙ্গবন্ধুর কৃষি বিষয়ক ৭১টি বাণী সম্বলিত একখানা পুস্তিকা প্রকাশ করেছে। এরই মধ্যে অধিকতর কলেবরে ১০০টি কৃষিবিষয়ক বাণী চিরসবুজ এবং মুজিব শতবর্ষের স্মারকগ্রন্থ চিরঞ্জীব মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মোড়ক উন্মোচন করেছেন। কৃষি বিষয়ক বঙ্গবন্ধুর এসব অমীয় বাণীর প্রতিটি পরতে পরতে রয়েছেÑ কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদসহ গোটা কৃষির প্রতি তাঁর মমত্ববোধ এবং অনাগত কৃষি নিয়ে তাঁর সুদূরপ্রসারী ভাবনার অতলান্তিক গভীরতা। তিনি এ দেশের কৃষি ও কৃষক নিয়ে দ্ব্যর্থহীনভাবে বলেছেন, ‘আমাদের সমাজে চাষিরা হলো সবচেয়ে দুঃখী ও নির্যাতিত শ্রেণি এবং তাদের অবস্থার উন্নতির জন্য আমাদের উদ্যোগের বিরাট অংশ অবশ্যই তাদের পেছনে নিয়োজিত করতে হবে।’ তিনি আরো বলেছেন, ‘দেশে কৃষি বিপ্লব সাধনের জন্য কৃষকদের প্রতি কাজ করে যেতে হবে। বাংলাদেশে এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি রাখা হবে না। জনগণের ঐক্যবদ্ধ কিন্তু নিঃস্বার্থ প্রচেষ্টার মাধ্যমেই দেশের বিধ্বস্ত অর্থনীতির দ্রুত পুনর্গঠনের নিশ্চয়তা বিধান করা যাবে।’ এভাবেই যুগান্তকারী কৃষিবান্ধব কার্যক্রমের মাধ্যমে আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু আধুনিক বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা হিসেবে বাংলাদেশের কৃষিকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব প্রদান করেছিলেন। তিনিই দিয়েছিলেন, চাকরি ক্ষেত্রে কৃষিবিদদের প্রথম শ্রেণির মর্যাদা। চাকরিতে প্রথম শ্রেণির মর্যাদাদানের পরে তিনি কৃষিবিদদের উদ্দেশ্যে জোর দিয়ে বলেছিলে, ‘আমি তোদের পদমর্যাদা দিলাম, তোরা আমার মান রাখিস।’ তাত্ত্বিক কৃষি শিক্ষার পাশাপাশি ব্যবহারিক কৃষির উপরে তিনি সবিশেষ গুরুত্ব দিয়েছিলেন। তিনি ব্যবহারিক কৃষি সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘শুধু কাগজে-কলমে আর বই পড়েই কৃষি কাজ হয় না। গ্রামে যেয়ে আমার চাষি ভাইদের সঙ্গে বসে প্র্যাকটিক্যাল কাজ করে শিখতে হবে।’


ব্যবহারিক কৃষি শিক্ষার উপরে অধিকতর গুরুত্ব করে আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ১৯৭৫ সালের মার্চ মাসের ১৪ তারিখে ঢাকার অদূরে জয়দেবপুরের ছায়াসুনিবিড় শান্তির নীড়রূপী সবুজ শ্যামলিমার আবরণে ঢাকা ৪৯ একর জমির উপরে জাপানি আন্তর্জাতিক সংস্থা জাইকার সহায়তায় গোড়াপত্তন করেছিলেন, কেন্দ্রীয় সম্প্রসারণ সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট বা সার্ডি। বঙ্গবন্ধু অনুধাবন করতেন, কৃষির লাগসই এবং টেকসই কৃষি প্রযুক্তি জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার জন্য দক্ষ ও যোগ্য কৃষি সম্প্রসারণ বিশেষজ্ঞ তথা দক্ষ মানব সন্তান তৈরির কোনো বিকল্প নেই।        কালের বিবর্তনে এবং সময়ের প্রয়োজনীয়তায় কেন্দ্রীয় সম্প্রসারণ সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট বা সার্ডিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগি সংস্থা থেকে অবমুক্ত করে কৃষি মন্ত্রণালয়ের একটা একক সহযোগী সংস্থা হিসেবে জাতীয় কৃষি প্রশিক্ষণ একাডেমি বা নাটার প্রবর্তন করেন। সবে নাটা এ বছর ০৭ জুন তারিখে করোনা কোভিডের মধ্যে শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পালন করলো, নাটার সপ্তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী, যেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত  সিনিয়র সচিব জনাব মোঃ মেসবাহুল ইসলাম। এরই মধ্যে নাটা সাফল্যের পথ বেয়ে শিকড় থেকে শিখরে আরোহণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আশা করা হচ্ছে সহসা এটি আন্তর্জাতিক মানের কৃষি প্রশিক্ষণের বিনয়ন বিদ্যাপীঠ হিসেবে পরিণত হবে। তেমনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন নাটার সপ্তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি জনাব ওয়াহিদা আক্তার, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন), কৃষি মন্ত্রণালয় ও ড. শেখা মোহাম্মদ বখতিয়ার, নির্বাহী চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলসহ আগত অন্যান্য অতিথিবৃন্দ। নাটা এখন শুধু দক্ষ    কৃষি বিশেষজ্ঞখ্যাত মানবসম্পদ উন্নয়নের সাথেই জড়িত নয়, এখানে এখন সাফল্যের সাথে পরিচালিত হচ্ছে নার্সভুক্ত কৃষি বিজ্ঞানীদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ এবং অপরপর সব বিসিএস ক্যাডার কর্মকর্তার অল ক্যাডার ফাউন্ডেশন ট্রেনিং কোর্স। সত্যি বলতে আজকের আধুনিক নাটার বীজ বপন করেছিলেন আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এবং সেটাকে, আধুনিকায়ন করত: অধিকতর পৃষ্ঠপোষকতা ও অর্থায়ন করে যাচ্ছেন, বঙ্গবন্ধুর যোগ্য তনয়া এবং বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সব সরকারের শাসনামলে; তাইতো বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার খ্যাতি পেয়েছে ‘কৃষিবান্ধব’ সরকার হিসেবে।


কৃষিবান্ধব জাতির পিতার আধুনিক বাংলাদেশ গঠনের স্বাপ্নিক চিন্তার পাশাপাশি ক্ষণজন্মা এই প্রবাদপুরুষ স্বমহিমায় দেশে বিদেশে নানাবিধ খেতাবে ভূষিত হয়েছেন। দরাজ কণ্ঠের সাহসী এই রাজনৈতিক নেতার জন্ম না হলে আজও আমরা স্বাধীনতার স্বাদ পেতাম কি না জানি না। কী এমন ছিল এই প্রজ্ঞাবান আর বরেণ্য রাজনীতিবিদের মধ্যে যাঁর ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের ১৮ মিনিটের স্ক্রিপ্টবিহীন ভাষণটিকে বিশ^ ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর  ইউনেস্কোর একটি উপদেষ্টা কমিটি বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ‘মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল’ রেজিস্টারে অন্তর্ভুক্ত করে। তখন সবে সেখানে বিশ্বের মাত্র ৪২৭টি ভাষণ নথিভুক্ত হয়েছিল। অথচ এই ভাষণ প্রদানের আগে দেশের আপামর জনসাধারণ কেউ এতটুকু আঁচ করতে পারেননি, কী এমন বলবেন সাতই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে। অথচ প্রজ্ঞাবান এই মানুষটি অত্যন্ত কৌশলী হয়ে ওই দিন স্বাধীনতার ঘোষণা প্রদান করেন। আর এসব কারণেই বঙ্গবন্ধুর অনবদ্য সাবলীল ভাষণ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করে। এটা বাঙালি হিসেবে আমাদের গর্ব ও অহংকারের জায়গা।


বঙ্গবন্ধুই আমাদের জাতির পিতা
৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র সংগ্রাম ত্রিশ লাখ শহীদের আত্মদান আর দুই লাখ মা বোনের সম্ভ্রম হারানোর বিনিময়ে যে স্বাধীনতা অর্জিত হলো সেটার মহানায়ক ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বিস্ময়কর ব্যাপার হলো ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে বন্দী বঙ্গবন্ধু বেঁচে আছেন না তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে, এসব ভাবনা পদদলিত করে শুধু তাঁরই নামে এদেশের ৯৮ শতাংশ আমজনতার আবাল বৃদ্ধ বণিতা কামার কুমোর মুটে কুলি দিনমজুর তাঁদের স্ব স্ব জীবন বাজি রেখে ৭ মার্চের ভাষণে উদ্দীপ্ত হয়ে যাঁর যা আছে তাই নিয়ে যেভাবে পারে সেভাবেই শত্রুর মোকাবেলা করে দেশকে স্বাধীন করেন।


বর্তমান সরকার জাতির পিতা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে পঞ্চদশ সংশোধনীতে বঙ্গবন্ধুকে সম্মাননা প্রদান করেছে। এটা একটা সাংবিধানিক স্বীকৃতি। কিন্তু বাঙালি জাতির মুক্তি সংগ্রামে তাঁর যে অবদান তাতে সংবিধানে নয়, জন মানুষের হৃদয়ে তিনি জাতির পিতা হিসেবে আছেন এবং থাকবেন। জাতির পিতাকে নিয়ে টানা হেঁচড়া বিষয়টি কিন্তু একমাত্র আমাদের দেশ ব্যতীত পৃথিবীর অন্য কোনো দেশেই নেই। প্রতিটি দেশেই তাদের জাতির পিতাকে সম্মান করে থাকেন। তাই আমাদেরও উচিত দলমতের ঊর্ধ্বে থেকে জাতির পিতাকে জাতির পিতা হিসেবে যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা।


১৯২০ সালের ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার তৎকালীন গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়ার সম্ভ্রান্ত শেখ পরিবারে জন্ম নেয়া খোকা নামের অজ গ্রামের সেই শিশুটি পরবর্তীতে হয়ে ওঠেন নির্যাতিত-নিপীড়িত বাঙালির মুক্তির দিশারী। গভীর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, আত্মত্যাগ এবং জনগণের প্রতি মমত্ববোধের কারণে পরিণত বয়সে তিনি হয়ে ওঠেন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা, ইতিহাসে ঠাঁই করে নেন স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকার এবং জাতির পিতা হিসেবে।


শেখ মুজিব যেভাবে বঙ্গবন্ধু হলেন
১৯৬৮ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে কয়েকজন রাজনীতিক, সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা  পূর্ব বাংলাকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত মর্মে শেখ মুজিবুর রহমানসহ মোট ৩৫ জনকে আসামি করে ১৯৬৮ সনের ২০ জুন আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার শুনানি শুরু হয়। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় আটক বঙ্গবন্ধুর কারণেই শুরু হয় ১৯৬৯ এর গণ অভ্যুত্থান। সে সময় ছাত্র-জনতা স্লোগানে মুখরিত করে রব তোলেন, ‘জেলের তালা ভাঙব, শেখ মুজিবকে আনব।’


অবশেষে নিরুপায় হয়ে আইয়ুব খান ২২ ফেব্রুয়ারি আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার করে শেখ মুজিবুর রহমানসহ অভিযুক্ত সকল আসামিকে নিঃশর্ত  মুক্তি প্রদান করেন। ১৯৬৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে ঢাকাস্থ রমনার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বিশাল গণসংবর্ধনার আয়োজন করা হয় এবং ওই সভায় তৎকালীন ডাকসুর সভাপতি আওয়ামী সরকারের প্রাক্তন মন্ত্রী, বঙ্গবন্ধুর একনিষ্ঠ সহচর তোফায়েল আহমেদের সভাপতিত্বে শেখ মুজিবকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করেন। ঢাকার ইতিহাসে এত বড় বিশাল জনসভা ইতঃপূর্বে আর কখনো হয়নি। উক্ত  মহাসমাবেশে ১০ লাখ লোকসমাগম হয়েছিল বলে মনে করা হয়। এর পর থেকে বাংলার জনগণের কাছে শেখ মুজিবুর রহমান নাম ছাপিয়ে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিটি ক্রমেই জনপ্রিয় হতে থাকে।


তাই আসুন, আমরা দলমতের ঊর্ধ্বে থেকে বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা হিসেবে সম্মান করি এবং আমরা যাঁরা কৃষিবিদ বা কৃষিজাত পেশার সাথে  জড়িত তাঁরা নতশিরে বঙ্গবন্ধুকে প্রণতি জানাই।

মহাপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত), জাতীয় কৃষি প্রশিক্ষণ একাডেমি (নাটা), গাজীপুর। মোবাইল : ০১৭১১৮৮৪১৯১

 

কৃষিবান্ধব জাতির পিতা আধুনিক বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা

কৃষিবান্ধব জাতির পিতা আধুনিক বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা

কৃষিবিদ ড. মো. আখতারুজ্জামান
আমাদের জাতির পিতা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠে বাঙালি, বহুধা অঁচলে অভিজ্ঞ, প্রাজ্ঞ, বিজ্ঞ একজন বরেণ্য রাজনীতিবিদ, বাঙালির মুক্তির দিশারি এবং আধুনিক বাংলাদেশের অন্যতম রূপকার। তাইতো তিনি তাঁর স্বল্প কর্মকালীন সময়ে কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শিল্প, সাহিত্য, বিজ্ঞান, ধর্ম, তথ্য প্রযুক্তি, নারীর ক্ষমতায়ন, পররাষ্ট্রনীতি ইত্যাকার বিষয়ে নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। তাই বঙ্গবন্ধু একবাক্যে আধুনিক বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা হিসেবে আখ্যায়িত করা যায়।
আমরা যাঁরা কৃষিবিদ বা কৃষির সাথে সংশ্লিষ্ট তাঁরা বঙ্গবন্ধুকে দেখি একজন কৃষিচিন্তক ও কৃষিবান্ধব রাষ্টনায়ক হিসেবে; তিনি ঠিক বুঝতে পেরেছিলেন আমাদের কৃষিই পারে আমাদের দেশের আপামর জনগোষ্ঠীর খাদ্য পুষ্টির জোগান দিতে কারণ এ দেশের মতো কৃষি উপযোগী উর্বর মাটি আবহাওয়া ও জলবায়ু পৃথিবীর কোথাও নেই। বঙ্গবন্ধু তাঁর স্বল্প কর্মকালীন সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের কৃষি উন্নয়নে যুগান্তকারী যেসব পদক্ষেপ নিয়েছিলেন, সেসবের মধ্যে অন্যতম ছিল-২৫ বিঘা পর্যন্ত জমির খাজনা মওকুফ; গ্রাম্য সমাজভিত্তিক কৃষকের জন্য সুদমুক্ত ঋণের প্রবর্তন; স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ২২ লাখ কৃষককে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ; প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বৃক্ষরোপণ অভিযান চালুকরণ; প্রথম বাজেটেই কৃষিতে ভর্তুকির ব্যবস্থা গ্রহণসহ সার, কীটনাশক ও সেচ যন্ত্রাংশ সরবরাহ; প্রাইম সাপোর্ট হিসেবে ধান, পাট, আখ প্রভৃতি ফসলের ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ; গ্রাম্য সমাজভিত্তিক সবুজ বিপ্লবের কর্মসূচি গ্রহণ; ১৯৭২-৭৩ সালের ৫০০ কোটি টাকা উন্নয়ন বাজেটের মধ্যে কৃষি খাতে ১০১ কোটি টাকার বরাদ্দ রেখেছিলেন।
অধিকন্তু কৃষি নিয়ে বঙ্গবন্ধু অনেক আপ্তবাক্যের অবতারণা করে গিয়েছেন। কৃষি মন্ত্রণালয় বঙ্গবন্ধুর কৃষি বিষয়ক ৭১টি বাণী সম্বলিত একখানা পুস্তিকা প্রকাশ করেছে। এরই মধ্যে অধিকতর কলেবরে ১০০টি কৃষিবিষয়ক বাণী চিরসবুজ এবং মুজিব শতবর্ষের স্মারকগ্রন্থ চিরঞ্জীব মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মোড়ক উন্মোচন করেছেন। কৃষি বিষয়ক বঙ্গবন্ধুর এসব অমীয় বাণীর প্রতিটি পরতে পরতে রয়েছেÑ কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদসহ গোটা কৃষির প্রতি তাঁর মমত্ববোধ এবং অনাগত কৃষি নিয়ে তাঁর সুদূরপ্রসারী ভাবনার অতলান্তিক গভীরতা। তিনি এ দেশের কৃষি ও কৃষক নিয়ে দ্ব্যর্থহীনভাবে বলেছেন, ‘আমাদের সমাজে চাষিরা হলো সবচেয়ে দুঃখী ও নির্যাতিত শ্রেণি এবং তাদের অবস্থার উন্নতির জন্য আমাদের উদ্যোগের বিরাট অংশ অবশ্যই তাদের পেছনে নিয়োজিত করতে হবে।’ তিনি আরো বলেছেন, ‘দেশে কৃষি বিপ্লব সাধনের জন্য কৃষকদের প্রতি কাজ করে যেতে হবে। বাংলাদেশে এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি রাখা হবে না। জনগণের ঐক্যবদ্ধ কিন্তু নিঃস্বার্থ প্রচেষ্টার মাধ্যমেই দেশের বিধ্বস্ত অর্থনীতির দ্রুত পুনর্গঠনের নিশ্চয়তা বিধান করা যাবে।’ এভাবেই যুগান্তকারী কৃষিবান্ধব কার্যক্রমের মাধ্যমে আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু আধুনিক বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা হিসেবে বাংলাদেশের কৃষিকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব প্রদান করেছিলেন। তিনিই দিয়েছিলেন, চাকরি ক্ষেত্রে কৃষিবিদদের প্রথম শ্রেণির মর্যাদা। চাকরিতে প্রথম শ্রেণির মর্যাদাদানের পরে তিনি কৃষিবিদদের উদ্দেশ্যে জোর দিয়ে বলেছিলে, ‘আমি তোদের পদমর্যাদা দিলাম, তোরা আমার মান রাখিস।’ তাত্ত্বিক কৃষি শিক্ষার পাশাপাশি ব্যবহারিক   কৃষির উপরে তিনি সবিশেষ গুরুত্ব দিয়েছিলেন। তিনি ব্যবহারিক কৃষি সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘শুধু কাগজে-কলমে আর বই পড়েই কৃষি কাজ হয় না। গ্রামে যেয়ে আমার চাষি ভাইদের সঙ্গে বসে প্র্যাকটিক্যাল কাজ করে শিখতে হবে।’
ব্যবহারিক কৃষি শিক্ষার উপরে অধিকতর গুরুত্ব করে আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ১৯৭৫ সালের মার্চ মাসের ১৪ তারিখে ঢাকার অদূরে জয়দেবপুরের ছায়াসুনিবিড় শান্তির নীড়রূপী সবুজ শ্যামলিমার আবরণে ঢাকা ৪৯ একর জমির উপরে জাপানি আন্তর্জাতিক সংস্থা জাইকার সহায়তায় গোড়াপত্তন করেছিলেন, কেন্দ্রীয় সম্প্রসারণ সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট বা সার্ডি। বঙ্গবন্ধু অনুধাবন করতেন, কৃষির লাগসই এবং টেকসই কৃষি প্রযুক্তি জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার জন্য দক্ষ ও যোগ্য কৃষি সম্প্রসারণ বিশেষজ্ঞ তথা দক্ষ মানব সন্তান তৈরির কোনো বিকল্প নেই। কালের বিবর্তনে এবং সময়ের প্রয়োজনীয়তায় কেন্দ্রীয় সম্প্রসারণ সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট বা সার্ডিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগি সংস্থা থেকে অবমুক্ত করে কৃষি মন্ত্রণালয়ের একটা একক সহযোগী সংস্থা হিসেবে জাতীয় কৃষি প্রশিক্ষণ একাডেমি বা নাটার প্রবর্তন করেন। সবে নাটা এ বছর ০৭ জুন তারিখে করোনা কোভিডের মধ্যে শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পালন করলো, নাটার সপ্তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী, যেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত সিনিয়র সচিব জনাব মোঃ মেসবাহুল ইসলাম। এরই মধ্যে নাটা সাফল্যের পথ বেয়ে শিকড় থেকে শিখরে আরোহণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আশা করা হচ্ছে সহসা এটি আন্তর্জাতিক মানের কৃষি প্রশিক্ষণের বিনয়ন বিদ্যাপীঠ হিসেবে পরিণত হবে। তেমনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন নাটার সপ্তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি জনাব ওয়াহিদা আক্তার, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন), কৃষি মন্ত্রণালয় ও ড. শেখা মোহাম্মদ বখতিয়ার, নির্বাহী চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা  কাউন্সিলসহ আগত অন্যান্য অতিথিবৃন্দ। নাটা এখন শুধু দক্ষ    কৃষি বিশেষজ্ঞখ্যাত মানবসম্পদ উন্নয়নের সাথেই জড়িত নয়, এখানে এখন সাফল্যের সাথে পরিচালিত হচ্ছে নার্সভুক্ত কৃষি বিজ্ঞানীদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ এবং অপরপর সব বিসিএস ক্যাডার কর্মকর্তার অল ক্যাডার ফাউন্ডেশন ট্রেনিং কোর্স। সত্যি বলতে আজকের আধুনিক নাটার বীজ বপন করেছিলেন আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এবং সেটাকে, আধুনিকায়ন করত: অধিকতর পৃষ্ঠপোষকতা ও অর্থায়ন করে যাচ্ছেন, বঙ্গবন্ধুর যোগ্য তনয়া এবং বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সব সরকারের শাসনামলে; তাইতো বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার খ্যাতি পেয়েছে ‘কৃষিবান্ধব’ সরকার হিসেবে।
কৃষিবান্ধব জাতির পিতার আধুনিক বাংলাদেশ গঠনের স্বাপ্নিক চিন্তার পাশাপাশি ক্ষণজন্মা এই প্রবাদপুরুষ স্বমহিমায় দেশে বিদেশে নানাবিধ খেতাবে ভূষিত হয়েছেন। দরাজ কণ্ঠের সাহসী এই রাজনৈতিক নেতার জন্ম না হলে আজও আমরা স্বাধীনতার স্বাদ পেতাম কি না জানি না। কী এমন ছিল এই প্রজ্ঞাবান আর বরেণ্য রাজনীতিবিদের মধ্যে যাঁর ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের ১৮ মিনিটের স্ক্রিপ্টবিহীন ভাষণটিকে বিশ^ ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর  ইউনেস্কোর একটি উপদেষ্টা কমিটি বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ‘মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল’ রেজিস্টারে অন্তর্ভুক্ত করে। তখন সবে সেখানে বিশ্বের মাত্র ৪২৭টি ভাষণ নথিভুক্ত হয়েছিল। অথচ এই ভাষণ প্রদানের আগে দেশের আপামর জনসাধারণ কেউ এতটুকু আঁচ করতে পারেননি, কী এমন বলবেন সাতই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে। অথচ প্রজ্ঞাবান এই মানুষটি অত্যন্ত কৌশলী হয়ে ওই দিন স্বাধীনতার ঘোষণা প্রদান করেন। আর এসব কারণেই বঙ্গবন্ধুর অনবদ্য সাবলীল ভাষণ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করে। এটা বাঙালি হিসেবে আমাদের গর্ব ও অহংকারের জায়গা।
বঙ্গবন্ধুই আমাদের জাতির পিতা
৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র সংগ্রাম ত্রিশ লাখ শহীদের আত্মদান আর দুই লাখ মা বোনের সম্ভ্রম হারানোর বিনিময়ে যে স্বাধীনতা অর্জিত হলো সেটার মহানায়ক ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বিস্ময়কর ব্যাপার হলো ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে বন্দী বঙ্গবন্ধু বেঁচে আছেন না তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে, এসব ভাবনা পদদলিত করে শুধু তাঁরই নামে এদেশের ৯৮ শতাংশ আমজনতার আবাল বৃদ্ধ বণিতা কামার কুমোর মুটে কুলি দিনমজুর তাঁদের স্ব স্ব জীবন বাজি রেখে ৭ মার্চের ভাষণে উদ্দীপ্ত হয়ে যাঁর যা আছে তাই নিয়ে যেভাবে পারে সেভাবেই শত্রুর মোকাবেলা করে দেশকে স্বাধীন করেন।
বর্তমান সরকার জাতির পিতা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে পঞ্চদশ সংশোধনীতে বঙ্গবন্ধুকে সম্মাননা প্রদান করেছে। এটা একটা সাংবিধানিক স্বীকৃতি। কিন্তু বাঙালি জাতির মুক্তি সংগ্রামে তাঁর যে অবদান তাতে সংবিধানে নয়, জন মানুষের হৃদয়ে তিনি জাতির পিতা হিসেবে আছেন এবং থাকবেন। জাতির পিতাকে নিয়ে টানা হেঁচড়া বিষয়টি কিন্তু একমাত্র আমাদের দেশ ব্যতীত পৃথিবীর অন্য কোনো দেশেই নেই। প্রতিটি দেশেই তাদের জাতির পিতাকে সম্মান করে থাকেন। তাই আমাদেরও উচিত দলমতের ঊর্ধ্বে থেকে জাতির পিতাকে জাতির পিতা হিসেবে যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা।
১৯২০ সালের ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার তৎকালীন গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়ার সম্ভ্রান্ত শেখ পরিবারে জন্ম নেয়া খোকা নামের অজ গ্রামের সেই শিশুটি পরবর্তীতে হয়ে ওঠেন নির্যাতিত-নিপীড়িত বাঙালির মুক্তির দিশারী। গভীর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, আত্মত্যাগ এবং জনগণের প্রতি মমত্ববোধের কারণে পরিণত বয়সে তিনি হয়ে ওঠেন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা, ইতিহাসে ঠাঁই করে নেন স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকার এবং জাতির পিতা হিসেবে।
শেখ মুজিব যেভাবে বঙ্গবন্ধু হলেন
১৯৬৮ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে কয়েকজন রাজনীতিক, সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা  পূর্ব বাংলাকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত মর্মে শেখ মুজিবুর রহমানসহ মোট ৩৫ জনকে আসামি করে ১৯৬৮ সনের ২০ জুন আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার শুনানি শুরু হয়। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় আটক বঙ্গবন্ধুর কারণেই শুরু হয় ১৯৬৯ এর গণ অভ্যুত্থান। সে সময় ছাত্র-জনতা স্লোগানে মুখরিত করে রব তোলেন, ‘জেলের তালা ভাঙব, শেখ মুজিবকে আনব।’
অবশেষে নিরুপায় হয়ে আইয়ুব খান ২২ ফেব্রুয়ারি আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার করে শেখ মুজিবুর রহমানসহ অভিযুক্ত সকল আসামিকে নিঃশর্ত  মুক্তি প্রদান করেন। ১৯৬৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে ঢাকাস্থ রমনার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বিশাল গণসংবর্ধনার আয়োজন করা হয় এবং ওই সভায় তৎকালীন ডাকসুর সভাপতি আওয়ামী সরকারের প্রাক্তন মন্ত্রী, বঙ্গবন্ধুর একনিষ্ঠ সহচর তোফায়েল আহমেদের সভাপতিত্বে শেখ মুজিবকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করেন। ঢাকার ইতিহাসে এত বড় বিশাল জনসভা ইতঃপূর্বে আর কখনো হয়নি। উক্ত  মহাসমাবেশে ১০ লাখ লোকসমাগম হয়েছিল বলে মনে করা হয়। এর পর থেকে বাংলার জনগণের কাছে শেখ মুজিবুর রহমান নাম ছাপিয়ে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিটি ক্রমেই জনপ্রিয় হতে থাকে।
তাই আসুন, আমরা দলমতের ঊর্ধ্বে থেকে বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা হিসেবে সম্মান করি এবং আমরা যাঁরা কৃষিবিদ বা কৃষিজাত পেশার সাথে  জড়িত তাঁরা নতশিরে বঙ্গবন্ধুকে প্রণতি জানাই।


মহাপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত), জাতীয় কৃষি প্রশিক্ষণ একাডেমি (নাটা), গাজীপুর। মোবাইল : ০১৭১১৮৮৪১৯১

 


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon